খাতুনগঞ্জে প্রতি বস্তা পেঁয়াজ ১০ টাকা!
জালালউদ্দিন সাগর: দেশের প্রধান পেঁয়াজের আড়ত ও পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) পেঁয়াজ ১০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৯০ টাকায়। শুধু তাই নয় পাইকারী বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি না হওয়ায় কারণে পঁচে যাওয়া পেঁয়াজ নিজ খরচে ভাগাড়ে ফেলে দিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের-এমনই অভিযোগ খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের।
খোঁজ নিয়ে যানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে পেঁয়াজের দর বেড়ে যাওয়ার কারণে পেঁয়াজ আমদানি করে এস আলম গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পেঁয়াজ আমদানিতে অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে বন্দরে পেঁয়াজ আসার পূর্বেই আমদানিকৃত সেসব পেঁয়াজের বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে টনে টনে পেঁয়াজ ফেলে দিতে হচ্ছে ভাগাড়ে।
খাতুনগঞ্জের হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মেসার্স বাঁচা মিয়া সওদাগর নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী মো. ইদ্রিস বলেন, পচন ধরে যাওয়ায় খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে প্রতি বস্তা পেঁয়াজ ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর যেসব পেঁয়াজ পচন ধরে নষ্ট হয়ে গেছে সেসব পেঁয়াজ নিজ খরচে ভাগাড়ে ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
পেঁয়াজে এতো বেশি পচন ধরছে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,মিয়ানমারসহ পাশবর্তী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আনতে সময় লাগে ২ থেকে ৩ দিন। কিন্তু সম্প্রতি পাকিস্তান, মিশর ও তুরষ্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে যেসব দেশ থেকে পেঁয়াজ আনতে সময় লেগেছে ২০ থেকে ২৫ দিন। দীর্ঘ সময় বস্তাবন্দি থাকার কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণ বলেও জানান অভিজ্ঞ এই ব্যবসাীয়।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে পাইকারী বাজারে পাকিস্তানি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকায়, মিসরের পেঁয়াজ ২০ থেকে ৩০ টাকায় এবং চায়না পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৭ টাকায়। অথচ একই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ পাইকারি দরে ৪৭ থেকে ৫০ টাকায় কিন্তু খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে।
খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর ২৮ অক্টোবর থেকে দেশে আসতে শুরু করে। সর্বশেষ ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ২০ দিনে ৪৮ হাজার ৩৮৯ টন পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসে। এছাড়া ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ৭ হাজার টন পেঁয়াজ খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। অন্য দিকে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ১ লাখ ২৭ হাজার ৯৬৪ টন পেঁয়াজ টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করে।
হাজার হাজার টন পেঁয়াজ আমাদানি করে নষ্ট হওয়ার পরও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম উর্ধ্বমূখী কেন জানতে চাইলে মো.ইদ্রিস বলেন, খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। সঠিকভাবে মনিটরিং করলে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেও জানান তিনি।