ব্যাংকে সাইবার হামলা চালাতে পারে ‘বিগল বয়েজ’
বাণিজ্য: বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর ওপর নতুন করে সাইবার হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অনলাইন লেনদেনব্যবস্থা ও এটিএম বুথে নজরদারি বাড়িয়েছে ব্যাংকগুলো। কোনো কোনো ব্যাংক রাতে এটিএম বুথ বন্ধ রাখা শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ নিয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেয়। এর পরই ব্যাংকগুলো তাদের নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
ব্যাংকগুলোকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, উত্তর কোরিয়াভিত্তিক হ্যাকার গ্রুপ ‘বিগল বয়েজ’ ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে হ্যাকার গ্রুপটি আবার বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ও সুইফট নেটওয়ার্কে হ্যাকিং করতে পারে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর থেকে পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সব রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের আর্থিক সেক্টরে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে নজরদারি বাড়ানো এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
এ ব্যাপারে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম শনিবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাইবার হামলা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি। এর পরই আমরা নিরাপত্তা বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছি।’
এদিকে সার্ভার ত্রুটির কারণে সরকারি ৪৮৪টি ওয়েবসাইট বন্ধ আছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তরের এসব ওয়েবসাইটের সার্ভার সম্প্রসারণের কাজ শেষে আগামী দুই দিনের মধ্যে ওয়েবসাইটগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে জানা গেছে। সরকারের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইটগুলোর সার্ভারেও সমস্যা দেখা দেওয়ায় তা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এটুআইর কর্মকর্তাদের ত্বরিত পদক্ষেপে আপাতত সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে। তবে এখনো কিছু ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। খাদ্য অধিদপ্তর, তথ্য অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরের ওয়েবসাইটে এ সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
এটুআই প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সার্ভার সমপ্রসারণের কারণে অনেকগুলো ওয়েবসাইট দেখা যাচ্ছে না। আমাদের লোকজন রাত-দিন কাজ করছে। যে সাইটগুলো দেখা যাচ্ছে না, আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।’
এটুআই সূত্রে জানা গেছে, এটুআইর অধীনে সরকারি মোট ওয়েবসাইটের সংখ্যা ৩৩ হাজার। এর মধ্যে ৪৮৪টি সাইট যে সার্ভারে রয়েছে সেটি বেহাল হয়ে যাওয়ার কারণে ক্যাপাসিটি এনহান্সমেন্টের জন্য তিন দিন ধরে কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে ওয়েবসাইটগুলো ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে।